PopUp

Friday, September 8, 2017

Romantic Love Story 001

গল্পঃ স্বপ্নস্নান
.
ক্রিং ক্রিং.. (নিশির ফোন বাজ্জে)
.
স্বপনীল এর বন্ধু অয়ান ফোন করেছে
.
- নিশি? (অয়ান)
- জ্বী। (নিশি)
- স্বপনীল কোথায়?
- ফোন দিন তাহলেই তো হয়।
- আরেহ আমি তো জানি স্বপনীল কোথায়।
তুমি কি জানো?
- বললো আজ নাকি বন্ধুরা মিলে কি
ব্যাবস্থা করবে।
- আরে রাখো ঐসব। স্বপনীলকে দেখলাম
একটা মেয়েকে নিয়ে রিকশায় ঘুরতে। প্রথমে
ভেবেছিলাম তুমি পরে কাছে গিয়ে দেখি
অন্যকেউ।
- কোন বন্ধু ঠন্ধু হবে হয়তো। বা অন্য কেউ।
- হুম একটু খেয়াল রাখিও।
.
নিশি রাগ ফাটছে। যাওয়ার সময় টাকা নিয়ে
গেলো মিথ্যে বলে। এখন নাকি কাকে নিয়ে
রিকশায় ঘুরছে।
.
নিশি ফোন দিলো স্বপনীলকে
.
- ঐ কই তুই? (নিশি)
,
- কে? আমি? ভুল করে মনে হয় আমার
নাম্বারে ফোন দিয়েছ। (স্বপনীল)
,
- ভুল করে দেইনাই। তোর কাছেই দিছি।
(নিশি)
,
- কিহহ? আমি আবার তুই হলাম কবে?
(স্বপনীল)
,
- তুই তো তুই'ই। মিথ্যা বলা টাকা নিয়ে অন্য
মেয়ের সাথে ঘুরাঘুরি না? বাসায় আয় তুই।
(নিশি)
,
- মানি ? কি কও? দিনদুপুরে কি হলো তোমার?
জ্বর ঠর আসছে নাকি? জরের মুখে কি কও
আবল তাবল? (স্বপনীল)
,
- রাখ তোর জ্বর। বাসায় আয় তারাতারি
নাহলে বাপের বাড়ি গেলাম। (নিশি)
,
- ও খোদা... কি হলো আমার আমার সহজ সরল
বউটার। (স্বপনীল)
,
- চাপা রাখ। বাসায় আয় সন্ধার আগে নাহয়
খবর আছে। (নিশি)
..
.
বলে কেটে দেয় নিশি । স্বপনীলের মাথায়
হাত। যতই লজ্জাবতী হোক। রাগ উঠলে তুই
তুকারি আরম্ভ করে। বন্ধুরা মিলে বাজার
করছিলো আজ পার্টি হবে খাওয়াদাওয়ার।
আজকে আয়ান চাকরী পেয়েছে। আয়ান
স্বপনীলের বন্ধু। কিন্তু সেই আয়ানই কি
গন্ডগোল লাগায় দিলো। এদিকে নিশি বসে
বসে কাঁদছে রুমের দরোজা বন্ধ করে। কারন
বাসার কেউ দেখলে জবাব দিতে হবে।
বাজার করার পরে রান্নাবান্না করছে সবাই।
খাওয়া আর স্বপনীলের কপালে জুটলোনা। এর
আগেই ফোন দিয়ে নিশি কান্নাকাটি।
বাসায় না গেলে বাপের বাড়ি চলে যাবে।
স্বপনীল বাসায় এলো। কয়েকবার ডাক দেয়ার
পরে রুমের দরোজা খুললো। খুলেই স্বপনীলের
কলারে ধরলো।
.
- ঐ মেয়েটা কে ছিলো সত্যি করে বল।
,
- ইয়া খোদা রুমের দরোজা খুলা তো।
,
- ফাইজলামু রাখ। বল মেয়েটা কে ছিলো?
,
- আজব তো। কখন থেকে তুই তুই করে যাচ্ছো।
পাগল হয়ে গেছো নাকি?
,
- ও এখন আমি পাগল হয়ে গিয়েছি না? তুই যখন
রিকশা করে অন্য মেয়ের সাথে ঘুরোস তখন
কি হুম?
,
- কিহহ? এই কাম কেডায় করলো?
,
- কোন কাজ?
,
স্বপনীল বোঝতে পারলো কেউ না কেউ ফোন
দিয়ে উল্টাপাল্টা কছু বলেছে নিশির কাছে।
,
- ফোন দিয়েছিলো কে?
,
- আয়ান ভাই।
,
- এই মারছে রে।
,
- মানে কি? তুই টাকা নিয়ে কি করছিস বল।
,
- আমি? আমি তো টাকা নিয়ে মিথিলা না
মিথিলা না মিতুর সাথে ঘুরেছি রিকশায়
করে। আর হ্যাঁ আমরা নৌকায় করে গল্প
করেছি। ফুচকা খেয়েছি। উফফ সেই
লেগেছে।
,
বলেই নিশিকে ধাক্কা দিয়ে রুম থেকে
বেরিয়ে যায়। বের হয়ে আয়ানকে ফোন
দেয়ার চেষ্টা করলো। হারামীর ফোন অফ।
শালা আজকের দিনেও বোম ফাটাইলো।
বারান্দায় দাঁড়িয়ে আছে। ইচ্ছা হচ্ছে গ্রীল
সব ভেঙ্গে দিতে। কিছুক্ষন পর আয়ান ফোন
দিলো নিশির কাছে।
.
.
- নিশি?
- জ্বী।
- বেশি বকাবকি করছো?
- মানে?
- হারামী আমার পকেট থেকে এক
হাজারটাকা বেশি নিছিলো তাই একটু বোম
ফাটাইলাম। সরি নিশি।
..
.
নিশি বোঝতে পারলো কাহিনি কি। এক
দৌড়ে গিয়ে স্বপনীল জড়িয়ে ধরলো। আর
কাঁদছে।
,
- সরি।
,
- হুম ঠিকাছে। ছাড়ো এখন।
,
- সরি তো।
,
- বললাম না ঠিকাছে।
,
- দেখো তুমি অন্য মেয়ের সাথে ঘুরবে এটা
কি আমি সহ্য করতে পারবো?
,
- আয়ান ফোন দিছিলো?
,
- হুম।
,
- ঠিকাছে। তুমি যাও। ভাল্লাগছেনা আমার
কিছু।
- কই যাবো? তুমি ছাড়া যাওয়ার যায়গা আছে
আমার?
,
- আরে বাবা আমাকে একটু একা থাকতে দাও।
,
- ওকে তুমি থাকো আমি তুমার জন্য চা নিয়ে
আসছি।
,
- খাবোনা এখন।
,
- খাবে দাঁড়াও আমি নিয়ে আসছি।
,
নিশি চা আনতে গেলো। স্বপনীলের প্রচণ্ড
মেজাজ খারাপ। অনেকদিন পর বন্ধুবান্ধবরা
মিলে এক হয়ে একটা.....! এটাও কপালে
সইলোনা। চা বানানোর সময়ই দরোজার
টিংটিং এর আওয়াজ। নিশি গিয়ে
দরোজাটা খুললো। একি! সবাই এসে গেছে
সাথে বিরিয়ানি নিয়ে।
,
- আপনারা?
- চা খেতে আসছি। কি হবেনা?
- হুম কেন নয়। ভীতরে আসুন।
- স্বপনীল্লা কই?
- বেলকনিনে আছে। আমি ডেকে দিচ্ছি।
স্বপনীল সবার কথার আওয়াজের টের পেলো।
কিন্তু আসলো কিভাবে? মাঝ মাঠে
রান্নাবান্না!
,
- তোরা এখানে ক্যামনে?
,
- দেখ ভাই। আমরা আর যাই হোক আমাদের
পেঠুককে রেখে তো আর খেতে পারিনা।
নাহলে আবার আমাদের পেটের ভাত হজম
হবেনা।
,
- গন্ডগোল একখান প্যাঁচাইয়া এখন আসছস...!
.
.
নিশি সবার জন্য চা বানিয়ে আনলো। পাঁচ
বছর পরে মনে হয় সবাই একসাথে হওয়া। এখন
সবাই বিবাহিত আর বিবাহিতা। মেয়েদের
তো পাওয়া যায়না বিয়ে হয়ে গিয়েছে।
ছেলেরা আয়ানের চাকরীর সৌজন্য এক
হওয়া। আজকে বেশ আড্ডাই হলো। আবার
সবাই ব্যাস্ত। কিছুদিন পর স্বপনীল দেশের
বাইরে চলে যায় একটা প্রজেক্ট এর জন্য।
কিছুদিন থাকতে হবে। দূরে গেলে ভালবাসা
বাড়ে এবং গভীর হয়। মাঝে মাঝে
ভালবাসাটা উপভোগ করার জন্য হলেও প্রিয়
মানুষের থেকে দূরে যাওয়া উচিৎ। স্বপনীল
সবসময়ই বলতো তোমার চুলের গন্ধে আমি
প্রতিদিন পাগল হতে চাই।
..
.
সকাল সকাল নিশির ফোন।
,
- খেয়েছো ?
- নাহ।
- কেন? প্রায় এগুরোটা বাজে।
- আরে এখানে তো আর কেউ তোমার মতো
রান্না ঝাল বেশি দেয়না।
- কিহহ? আমি ঝাল বেশি দেই? তাহলে অন্য
কিছু খেলেই পারো।
- দেখি। তুমি খেয়েছো ?
- তুমি খাওয়ার আগে আমি খেয়েছি
কোনদিন? আর আজকে তো গলা দিয়ে কিছু
নামবেনা।
- না গো। আমি তো দুষ্টুমী করেছি। তোমার
রান্নার স্বাদের সাথে কোন তুলনাই চলেনা।
- হুম হয়েছে হয়েছে। বোঝি তো সব।
- এই দেখো। মিথ্যা বললে রাগ করো সত্যি
বললে বিশ্বাস করোনা। থাক আর কিছু
বলবোনা।
- কেন বলবেনা?
- তুমি তো রাগ করো।
- তাতে কি তুমি তো আছো রাগ ভাঙ্গানোর
জন্য। নাকি তাও পারবেনা?
- খিদে পেয়েছে এখন খুব। তুমি খেয়ে নিও।
আমি খাচ্ছি।
,
দুদিন পর দেশে ফিরবে। কেউ অবশ্য এগিয়ে
আনতে যায়নি। এয়ারপোর্ট থেকে বাসা
পনেরো মিনিট। এসে ফোন দিলো।
,
- তোমার জন্য কিছু আনেনি কিন্তু।
( স্বপনীল)
,
- উমম.. আমি জানি এনেছো।
(নিশি)
,
- সত্যিই আনেনি। ( স্বপনীল)
,
- তোমার থেকে মুল্যবান আমার কাছে আর
কি আছে? তুমিই বাড়ি ফিরছো। আর আমার
জন্য আনার কি বাকি আছে? (নিশি)
,
- ধরো আমিও বাড়ি পৌঁছালাম না তখন?
( স্বপনীল)
,
- একদম এসব কথা বলবানা। আমার ভয় করে
কিরকম।(নিশি)
,
- হেহে পাগলী। ( স্বপনীল)
.
.
স্বপনীল বাসায় আসে। নিশি খাটে বসে
আছে।
,
- তোমার জন্য অনেক অনেক দামী কয়েকটা
জিনিষ আনিনি।
,
- হিহি।
,
- শাড়ি, চুড়ি, পায়েল,গহনা এসব কিছুই না।
,
- উমম.. ভাল।
,
- শুধু বোরখা এনেছি।
- এ পর্যন্ত কয়টা বোরখা দিয়েছো মনে করো
তো।
,
- নয়টা মনে হয়।
,
- তবুও তোমার কাছে থেকে বোরখা পেতেই
আমার অনেক ভাল লাগে।
,
- হিহি জানিতো।
,
- খাবে চলো। অনেক ঝাল দিয়ে রান্না
করেছি।
,
- খেতে আমার অসুবিধে হবেনা। তোমার
হাতের বিষ আর খাঁটি মধুর মধ্যে পার্থক্য
নেই।
,
- ইশশ..

0 comments:

Post a Comment